মশিয়ার রহমান, নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারী জলঢাকায় দুই অধ্যক্ষের টানাটানিতে ১১ মাস ধরে একটি কলেজের বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে শিক্ষক কর্মচারীরা। হাইকোর্টে মামলা পাল্টা মামলা চলমান থাকার কারনে এমনটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মীরগন্জ হাট ডিগ্রী কলেজে। সরেজমিন গিয়ে জানাযায় ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পযর্ন্ত বেতনহীন রয়েছেন ৪১ জন শিক্ষক কর্মচারী। মিমাংসার জন্য বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হলেও সমাধান কিছুই হয়নি। কবে সমস্যা মিঠবে এর উত্তর কেউ দিতে পারছে না। ফলে বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন ওই কলেজে কর্মরত সকল স্টাফরা। সহকারী অধ্যাপক প্রসূন কুমার নন্দী মিঠু বলেন আমরা এগারো মাস ধরে বেতন পাই না। খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি। আমরা কোনো বিবাদ চাই না বেতন চাই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রভাষক জানান দুই পক্ষের টানাটানিতে কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এখন ঠিক মতো ক্লাস হয় না। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও অব্যাহতি প্রাপ্ত অধ্যক্ষের মধ্যে মামলায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সভাপতি পদ নিয়েও আছে জটিলতা। সুত্র জানায় গত বছর মার্চ মাসে মীরগন্জ হাট ডিগ্রী কলেজের তৎকালীন সভাপতি খয়রাত হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম এনে অব্যাহতি প্রদান করেন এবং সভাপতি পদে আবুল কালাম আজাদকে ঘোষণা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এসময় অধ্যক্ষ হিসাবে দ্বায়ীত্ব পালন করেন আবুজার রহমান। পরবর্তীকালে আবুজারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে তাকে বরখাস্ত করেন সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয় মিজানুর রহমানকে। পরে আবুজার রহমান নিজেকে বৈধ অধ্যক্ষ দাবী করে হাইকোর্ট মামলা দায়ের করে হেরে গেলে তিনি আবার সিভি মামলা করেন। যা চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে আবুজার রহমান বলেন আমাকে একক ক্ষমতা বলে নিয়মনীতি ছাড়াই বরখাস্ত করছে সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। আমি বৈধ প্রিন্সিপাল। তাই মামলা দায়ের করছি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন আবুজার অবৈধ পন্থায় তৎকালীন সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে অধ্যক্ষ বলে নিজেকে দাবি করে আসছিলেন। তার নিয়োগের কোনো সঠিক কাগজপত্র কারও কাছে দেখাতে পারেননি। কলেজের বেতনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করলেও আবুজারের বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ হাইকোর্টে তার দেয়া মামলার রায় আমি পেলে তিনি আবার সিভি মামলা করেন। সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন মীরগন্জ হাট ডিগ্রী কলেজের সভাপতি এ কে আজাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় ওনার স্বাক্ষরে বিল হয় না। এছাড়াও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা রয়েছে। এসব জটিলতার কারণে বেতন বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে ইউএনও অফিসে বসাও হয়েছিল কিন্তু কোনো এক পক্ষের কারনে বিষয়টি সুরাহা হয়নি।
Leave a Reply